পাটগ্রামে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত জহির উদ্দিনের লাল মুক্তিবার্তা নম্বর ব্যবহার করে অপর এক মৃত জহির উদ্দিন (তেলি) এর সন্তানেরা তার বাবার নামের সাথে মিল থাকায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কৌশল অবলম্বন করে মৃত বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে ভাতাসহ নিয়মিত যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছেন। বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির নজরে আসলে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সেই সূত্র ধরে ভুক্তভোগীরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেও সমাধান না পাওয়ার ফলশ্রুতিতে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিনের স্ত্রী মোছাঃ ছামিনা খাতুন।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ছামিনা খাতুন বলেন, আমার স্বামী একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা তিনি কালীগঞ্জ ভেরাবাড়ি এলাকায় থেকে ৬নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি কর্মসংস্থানের জন্য পাটগ্রাম রসূলগঞ্জ এলাকায় দীর্ঘদিন বসবাস করেন। পরে তিনি আমার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। যে কারণে আমরা দুজনেই ধবলসতী এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করি। তিনি রসুলগঞ্জে দীর্ঘদিন বসবাস করার কারণে লাল মুক্তিবার্তায় তার ঠিকানা রসূলগঞ্জ হয়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নামের সাদৃশ্যের মিল থাকার কারণে আমার স্বামীর মুক্তিবার্তা নম্বর (০৩১৪০৩০৩৫৫) ব্যবহার করে ভিন্ন জহির উদ্দিনের সন্তানেরা নিয়মিত ভাতা উত্তোলন করছেন, যা আইনগতভাবে অপরাধ ও প্রতারণার শামিল। আমি এটার স্থায়ী সমাধান চাই। আমার স্বামীর এমআইএস তালিকায় শুধুমাত্র বেসামরিক গেজেট নম্বর (১৪০৬) দিয়ে ভাতা অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু আমার স্বামীর ভারতীয় তালিকা নম্বর (৪২৯৩৭) এবং লাল মুক্তিবার্তা নম্বর (০৩১৪০৩০৩৫৫) এর উল্লেখ না থাকায় অপর জহির উদ্দিনের সন্তানেরা আমার স্বামীর মুক্তিবার্তা নম্বর ব্যবহার করে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে সুকৌশলে ভাতা উত্তোলনসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। এমন পরিস্থিতিতে আমার স্বামীর ভারতীয় তালিকার নম্বর ও লাল মুক্তিবার্তা নম্বর এমআইএস তালিকায় সংযুক্ত করে তদন্ত সাপেক্ষে নামধারী অপর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিনের যাবতীয় নথিপত্র বাতিলের দাবী জানিয়ে এই চক্রান্তের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি জানাই। সেই সাথে মুক্তাঞ্চলের প্রকৃত ইতিহাস অক্ষত রাখতে আমি নামধারী ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের জন্য সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাগনের দায়িত্বশীল ভুমিকা কামনা করছি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধার ওয়ারিশগনের তেমন কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।